ফাহিমা আর অয়ন
পর্ব-১
অয়ন: | অয়ন দিল্লির প্রবাসী বাঙালী মধ্যবিত্ত পরিবারে বড় হয়েছে |
ফাহিমা: | ফাহিমার জন্ম কলকাতায়, মা মারা যাবার পর, বাবা আর পুরো পরিবার ইউ পি-তে– |
অয়ন: | অয়নের বাবা, মা দুজনেই অধ্যাপক ছিলেন – retired বর্তমানে, অয়ন সম্পন্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে |
ফাহিমা: | বাবা-মা নেই, দাদাদের কাছে বড় হয়েছে ফাহিমা রক্ষণশীল মুসলিম অবস্থাপন্ন ব্যবসায়ী পরিবারের মেয়ে |
অয়ন: | বুদ্ধিমান, দৃষ্টিভঙ্গি স্বচ্ছ নিজস্ব মতামত আছে, চলন-বলন শার্প অ্যান্ড পজিটিভ |
ফাহিমা: | এককথায় সুন্দরী, ধ্যানধারণা আধুনিক, চালচলন পজিটিভ কিন্তু introvert, সাধারণত কথা কম বলে |
অয়ন: | পড়াশুনায় বরাবরই ভালো JNU-তে পি এইচ ডি ইংরেজিতে- এখন ইউ পি-র এক ইউনিভার্সিটির ইংরেজির অধ্যাপক |
ফাহিমা: | ইংরেজিতে এম ফিল শেষ করে, অয়নের কাছে পি এইচ ডি শুরু করেছে, সে বাংলা, উর্দু আর ইংরেজি জানে– |
অয়ন: | ফাহিমা, তুমি topic নিয়ে ভেবেছ, কি নিয়ে কাজ করবে |
ফাহিমা: | হ্যাঁ স্যার, আমি ভেবেছি আপনার সাথে আলোচনা করব আজ |
অয়ন: | ঠিক আছে, এসো আমারঅফিসে |
ফাহিমা: | অয়নের সাথে অফিসে আসে |
অয়ন: | কোনো ভণিতা ছাড়া প্রশ্ন করে, তুমি কতদিন হলো কাজ করছো আমার সাথে |
ফাহিমা: | ওর দিকে তাকিয়ে বলে তিনমাস হবে |
অয়ন: | আর কতদিন স্যার বলবে অয়ন-দা সম্বোধনে ইনফরমাল সম্পর্ক তৈরি হয়, (বলে হেসে ফেলে) |
ফাহিমা: | (ওর দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসে), ঠিক আছে ডাকব দায় নিতে পারবেন ত’ পরে |
অয়ন: | (তাকিয়ে থাকে, কি mean করেছে), মুহূর্তের মধ্যে উত্তর দেয়- হ্যাঁ |
অয়ন: | (চট করে কথা ঘুরিয়ে বলে) discussion শুরু করা যাক |
ফাহিমা: | (বুঝতে পারে ও লজ্জা পেয়েছে) হ্যাঁ অয়ন-দা নোটবুক দেখে আলোচনা শুরু করি |
অয়ন: | হ্যাঁ- |
ফাহিমা: | Broadly topic title- modern and contemporary English Poetries, post 1950 |
ফাহিমা: | (বলতে থাকে), বিশেষ করে Irish কবি Seamus Heaney-র কাজ নিয়ে |
অয়ন: | Brilliant – যত দেখছি অবাক হচ্ছি |
ফাহিমা: | আপনি very positive, তাই আমার সব কিছুতে ভালো দেখেন |
অয়ন: | (খানিকটা অপ্রস্তুতে পড়ে যায়, সামলে নিয়ে বলে) আমিও ভাবছিলাম modern English poets-র মধ্যে অন্যতম-Nobel Laureate |
অয়ন: | যে কবিতা আমাকে haunt করে যেমন ‘The Barn’, ‘Death of a naturalist’, আরও অনেক, (বলে তাকিয়ে থাকে ফাহিমার দিকে) |
ফাহিমা: | অনেক কবিতা আছে, ‘Death of a naturalist’ নোবেল পেয়েছিলেন, হ্যাঁ, আরও কবিতা আছে (বলে মুখ নিচু করে) |
অয়ন: | Seamus Heaney-র Gift of Rain’ থেকে কয়েকটা লাইন আবৃত্তি করে “ Cloudburst and steady downpour Now for days. Still mammal, Straw-footed on the mud, he begins to sense weather by his skin….” |
ফাহিমা: | (অয়নের মুখের দিকে এক ঝলক তাকিয়ে) বাইরের আকাশে চোখ তার |
ফাহিমা: | এরপর ‘Gift of Rain’ থেকে পড়ে “A man wading lost fields brakes the pane of flood: a flower of mud- water blooms up to his reflection like a cut swaying its red spoors through a basin…” |
অয়ন: | (চুপ করে থাকে.. ফাহিমার দিকে তাকিয়ে বলে), আমার ক্লাস আছে তুমি কাজ শেষ কর… |
ফাহিমা: | okay অয়ন-দা! আমি synopsis লিখছি কয়েকদিন পর কথা বলব- নিজের অফিসের দিকে এগিয়ে যায় |
অয়ন: | ক্লাসের দিকে- |
ফাহিমা: | দিন কয়েক পর ফাহিমা আসে Synopsis নিয়ে, আলোচনার জন্য |
অয়ন: | এসো ফাহিমা, কাজ এগিয়েছে? |
ফাহিমা: | হ্যাঁ, প্রায় ঘণ্টা খানেক discussion চলে- |
অয়ন: | এরপর অয়ন বলে ইউনিভার্সিটি কফিশপে যাই- for a brake- |
ফাহিমা: | (কিন্তু কিন্তু ভাব আছে, ফাহিমার কানে এসেছে অয়নের কাছে ওর কাজ নিয়ে কারণ অয়ন extra care নেয় about her work, অয়নের কাছে আরও কয়েকজন কাজ করে, তাদের ধারনা অয়ন ফাহিমাকে বেশী সময় দেয়… ফাহিমা এটা জানে অয়ন কাজের ব্যাপারে একই রকম serious)… |
অয়ন: | কি ভাবছ, ফাহিমা? |
ফাহিমা: | (কিন্তু ফাহিমা বোঝে, তার প্রতি অয়নের স্নেহ, ভালোলাগা বেশীই… নিজের মধ্যে ফিরে আসে), না স্যার তেমন কিছু নয়, চলুন- |
(অয়ন আর ফাহিমা কফিশপে। ওদের একসাথে দেখে অনেকে অবাক হয়, অয়ন কফিশপে একাই আসে, আসলে প্রফেসরদের সাথেই। অয়ন কাউন্টারে দুটো কফি চায়। ওরা টেবিলে গিয়ে বসে, দূরে। এখানে প্রফ, পি এইচ ডি স্কলাররা আসে, ওদেরকে লক্ষ্য করে, চাহনে অবাক দৃষ্টি। ওরা কয়েকজনকে greet করে টেবিলে বসে, কফিও দিয়ে যায়।) | |
ফাহিমা: | অয়ন-দা, আমার না আসলে ভালো হত |
অয়ন: | কেন? |
ফাহিমা: | আমি রক্ষণশীল মুসলিম পরিবারের মেয়ে, যতই আমি এর বিরুদ্ধে বা আমার আধুনিক ভাবনা-চিন্তা, একা কিছু করা যায় না |
অয়ন: | এ ভাঙা সহজ নয়। ধীরে ধীরে না করলে, যে কোন ধর্মের যে কোন পরিবার রক্ষণশীল প্রথা ধরে রাখবে। এখনাকার গোঁড়া হিন্দু পরিবার কি কম যায়? |
ফাহিমা: | অয়ন। sorry- হটাৎ-ই তোমাকে first name-এ ডেকে ফেললাম। কিছু মনে কর না (বলে মুচকি হাসে ওর দিকে তাকিয়ে) |
অয়ন: | (ফাহিমার দিকে তাকায়।) cool। first name culture আমি পছন্দ করি। তুমি আমাকে অয়নই বলবে |
ফাহিমা: | (চুপ করে থাকে!) সবার সামনে? অয়নের চোখে চোখ রেখে চপল হাসি ফাহিমার… |
অয়ন: | পরিস্থিতি বুঝে বলবে, তাকিয়ে থাকে ওর দিকে |
ফাহিমা: | all right- (বলে, চুপ করে থাকে) |
অয়ন: | কিভাবে প্লান করছ কাজ নিয়ে? |
ফাহিমা: | অয়ন, আমি বুঝতে পারছি না- বাড়িতে আমার বিয়ে নিয়ে কথা শুরু করেছে, এড়িয়ে যাচ্ছি। কতদিন এভাবে চলবে তা জানি না |
ফাহিমা: | দাদাদের সাথে থাকি, বাবা যাই সম্পত্তির ভাগ আমাকে দিয়ে গেছে, আমি তা চাইতে পারব না |
অয়ন: | (কিছু বলতে যায়, কিন্তু চুপ করে থাকে)- ফাহিমা: আমার পাঁচ বছর বয়সে মা আর বাবা আমার দশ বছর বয়সে মারা যান– ১৫ বছর দাদাদের কাছে- |
অয়ন: | (আবার কিছু বলতে চায়)- |
ফাহিমা: | তুমি ত’ জানো, sorry- |
ফাহিমা: | sorry অয়ন |
অয়ন: | (পরিবেশ হালকা করার জন্য Seamus Heaney-র Good-night কবিতা থেকে পড়ে)– “A latch lifting, an edged den of light Opens across the yard. Out of the low door They stoop into the honeyed corridor, Then walk straight through the wall of the dark.” |
ফাহিমা: | (Seamus Heaney-র আর এক কবিতা The Return থেকে পড়ে)— “In ponds, drains, dead canals she turns her head back, older now, following whim deliberately till she’s at sea in grass and damned if she’ll stop so it’s new trenches, sunk pipes, swamps, running streams, the lough, the river. Her stomach shrunk, she exhilarates in mid-water. Its throbbing is speed through days and weeks.” (কিছুক্ষণ দুজনেই চুপ)- |
ফাহিমা: | (নম্র, নীরব হাসিতে.. অয়নের দিকে তাকিয়ে, কিছু বলতে যায়- বুঝতে পারে অয়নের স্নেহ, ভালোলাগায় নির্ভরতা এনেছে, তা’ প্রেম কিনা সে এখনও বুঝতে পারেনি নিজের অন্তর থেকে)— |
অয়ন: | ফাহিমা, কি চিন্তা করছ? ফাহিমা: অতদূর ভাবতে পারিনি, বাড়ির ১৯ শতকের মনোভাব, দৃষ্টিভঙ্গি- কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তা’ ভাবলে শরীর কেমন করে |
অয়ন: | এত কি ভাবছ? |
ফাহিমা: | না, অয়ন- অফিস ফিরে যাই ফেরার পথে ও বন্ধুদের কাছে দাঁড়ায়— |
অয়ন: | (এগিয়ে যায় নিজের অফিসের দিকে— পরের দিন, ক্লাস নেই.. Laptop-এ আর্টিকেল পড়ছে.. কিন্তু নানা ভাবনা মাথার মধ্যে ফাহিমাকে নিয়ে— ফাহিমা নির্ভরতা খুঁজে পেয়েছে তার মধ্যে— নিজের দুর্বলতা কখনই সরাসরি প্রকাশ করেনি– ফাহিমা আমার অতিরিক্ত যত্ন পড়াশুনার ব্যাপারে আর ওর প্রতি স্নেহ বুঝতে পারে– তা কি রূপ নিয়েছে আমার ভালোলাগা বা তার প্রতি প্রেম শুধু মাত্র হাবেভাবে জানিয়েছে first name-এ আমায় ডেকে আর তুমি বলে আমার থেকে ফাহিমা প্রায় পাঁচ-ছয় বছরের ছোট হবে কিন্তু সে matured মেয়ে, একা বাড়ির পরিস্থিতি মানিয়ে বা এড়িয়ে চলে সময়ে সময়ে এই সব ভাবতে থাকে) |
No Comment! Be the first one.