হে বৃক্ষ, দিন গুণতে থাকো

হে বৃক্ষ,
শতাব্দী থেকে শতাব্দী ধরে
হাওয়ার মাদলে পাতাগুলো
নেচে উঠলেই
মৃত্যুর জন্য দিন গুণতে শুরু করো
অর্জুনের সঙ্গে যুদ্ধের জন্য
কর্ণের যে রথ তৈরি হয়েছিল
তা তোমাকে দিয়েই
আর অর্জুন যে ধনুক ও তীর দিয়ে
কর্ণকে বধ করেছিল
তা তৈরি হয়েছিল তোমাকে চীরেই
যে গীটার নিয়ে গান গেয়ে
জোন বায়েজর জগত জোড়া নাম
ওই গীটারও তোমা থেকেই
ডাইনিং রুমে খাবার সাজানো
থাকে
টেবিলের উপরে
তুমিই নানা রকমফেরে
ওই বাহারি টেবিলগুলো
সরু করাতের
সোহাগ ছোঁয়ায়, চীরে
নানা মাপে সাজিয়ে রাখে
নানাজনের জন্য
নিজেকে মেলে রাখাই তোমার কাজ
নানা আকারের গুঁড়ি হয়ে
নিতে থাকবে দরকারে
ঠিক মাপে কেটে নিয়ে
নানা মাপের সারি
হওয়ার আগে কথাগুলো
মুখে থেকে
আলজিভতেই আটকে থাকে
সেই কথা বেরিয়ে আসেনি
সবার সামনে
মরণ ছোঁয়ার আগে
ওই পাতাগুলো
নজরে আসে
যাওয়া-আসার সময়ে
বা
সোহাগে রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতেও
কিন্তু ওদের কোন পরিচয় নেই
হে বৃক্ষ,
রোদ্দুরের রূপালি চেহারায় বা
অমাব্যসার অন্ধকারে
দিক দিগন্তের বাতাসে
আশ্বাস পাই
দিনে বা রাতে
গোল টেবিলে বসার জন্য
শতাব্দী থেকে শতাব্দীতে
সারি সারি
নজরবন্দী কাঠ ছাড়া
সহজে আর কিছু মনে
করতে পারি না
তোমার নিজের মতো করে
দাঁড়িয়ে থাকাকেও
মনে করতে পারি না
শতাব্দী থেকে শতাব্দী ধরে
হাওয়ার মাদলে পাতাগুলো
নেচে উঠলেই
হে বৃক্ষ,
মৃত্যুর জন্য দিন গুণতে শুরু করো
সারি সারি নজরবন্দী লাশ হবে, অবশেষে।
1/4/2025
Amitava Mukherjee
Copyright@ Amitava Mukherjee
No Comment! Be the first one.