কাব্য কাহিনী

দুই মেয়ের প্রেম পর্ব ১-৫

Amitava Mukherjee

4 Min Read

2.6K Views

11 Comments

পর্ব-১, পর্ব-২, পর্ব–৩, পর্ব–৪ ও পর্ব–৫

পর্ব -১

এই গোলাপ হাজার শব্দের কাহিনী নিয়ে এসেছে  

জয়ী অর্পিতাকে 
লাল গোলাপ 
দিয়ে বলে  
তুমি নীরব সুন্দরী
তোমার wit সবাইকে 
ছাড়িয়ে যায়-- 

তুমিই তো বলো তুমি
এইরকম কিছু নও--

তোমাকে জয়ী ঠিক
কথাই বলে
তুমি শুধুই উদাসীন
এক মেয়ে 

তুমি যা  
তাই-ই তুমি
নিজের মতো—

এই গোলাপ
তোমারি-ই, জয়ীর-ই--

তুমি
আমার কাছে
এইরকম-ই 
তোমাকে ভাললাগা
এইরকম-ই 

তুমি সুন্দরী তোমারি
মতো
তোমার wit
তোমারি মতো

তোমার বুদ্ধি
তোমার কাজকর্ম
তোমারই মতো
তুমি এইরকম-ই  

লাল গোলাপ
তোমার কাছে 
নিয়ে আনে
যা তুমি
তাই

আর
তোমার নিঝুম 
মেয়েলি ভাষা
আমারি কাছে 
এর বেশী কিছু নয়

অর্পিতা একাই তুমি
কোনো প্রত্যাশা ছাড়া 
এগিয়ে নিয়ে
গেছো নিজেকে

কোনো বিস্ময়ে
কোনো সংজ্ঞায় 
তোমাকে ধরা 
যায় না

অর্পিতা তুমি
আমার গোলাপ
হাতে করে নাও, আমার 
হাজার প্রশংসার সাথে—

জয়ী তোমার সাথে জয়ী
হয়ে আছে, যেমন তুমি
অর্পিতা হয়ে আমার সাথে

এই গোলাপ হাজার
শব্দের কাহিনী নিয়ে 
এসেছে
তোমারি কাছে।

পর্ব-২

সে তাকেই ভালবাসে

একাকী গাছের আমন্ত্রণে
আপন মনে সে
বারান্দায় বৃষ্টিতে

উমুক্ত করে দুই হাত
উন্মুখ মন প্রত্যাশায় 
মেহেন্দিতে
জলের কণা, জলের কণা

কণা মালা হয়ে 
জড়িয়ে থাকে গলায়
নেমে আসে বুক অব্দি

ফিরে যাওয়া বৃষ্টি 
ঠোটে দেয় চুমু 
কাছে টানে শরীর 

জয়ী নিজের মতো
কাছে আসে
বৃষ্টির কণামালা নিয়ে

অর্পিতা ঠাহর করতে
পারে
বৃষ্টির আগাম অভ্যর্থনা

একাকী গাছের আয়েশী 
বিলাসে
বৃষ্টিতে ভেজা জয়ী
কণামালা বুক ছাড়িয়ে--

কাছে টেনে নেয় অর্পিতা 
জয়ীকে
সে ভালবাসে তাকে

বৃষ্টিতে মিলিয়ে যায়
কণামালা--


তারা চন্দ্রিমাতে – 

অহংকারী ভালবাসায় 
তারাই শুধু।

পর্ব-৩ 

এড়িয়ে যায় ওদেরকে

আমরা তো জানি
ওরা আমাদেরকে কি
চোখে দেখে

তোমার-আমার সম্বন্ধে 
কি ভাবে—

আমরা কোনভাবে
বুঝতে দেবো না 
আমরা পরখ করেছি
ওদেরই বিরুদ্ধতা —

ওরা তো জানে
আমাদের যা স্বপ্ন
তা এগিয়ে যাওয়ার

ওদের এখনও আশা
আছে
ওরা তোমাকে আমাকে
ঠিক কথা
ঠিক স্বপ্ন
ঠিক দিকে 
এগিয়ে যাওয়া বলবে?
 
আমার আশঙ্কা ওদেরকেই নিয়ে

ওদেরকে এড়িয়ে যাই
আমরা জানি
আমাদের
ঠিক আর বেঠিক।

পর্ব-৪

আমাদের মতো

আজ শুক্রবার--
উইকএন্ড শুরু, ট্রিনকাস আগের উইকএন্ডে--
অর্পিতা, জয়ী ফিরে এসেছে এপার্টমেন্টে সময় মতো --

ডিনারের পর পোর্ট ওয়াইন 
সন্ধেতে হোয়াইট ওয়াইন  
Bose-এ Bach-র 
Violin Concertos 

অর্পিতা decked-up, মুখ হালকা 
Make-up, শরীর থেকে channel-র গন্ধ
তাঁতের বালচুরী শাড়ি, লম্বা বেণী,
Very classical look…

জয়ীও কম যায় না, Armani-র cagle blue
Ripped high waist baggy jeans আর
Guess-র top, very attractive...

মনের মতো সন্ধেতে, দুজনেরই ভালো লাগছে
কোনো সময় হিন্দি বা বাংলা ফিল্মি গান 
কোনো সময়ে নামাজ ভেসে আসে
12th ফ্লোরে...

পাশাপাশি দুজনে, হোয়াইট ওয়াইনের গ্লাস নিয়ে—

জয়ীর মনে হয় অর্পিতা বেশী
যত্ন নেয় আমাকে আর 
আমাদের আশেপাশে যারা আছে 
আমাদের মত মেয়েরা কাঁটাতারের 
বেড়ায়, অন্যরা তাই ভাবে
তাদের আমি বা অর্পিতা খোঁচা দিই 
তাদের নিছক বুঝিয়ে দিই আমরা
অনেক কিছু দিতে পারি
সাধারণ টিপ্পনী কেটে ছেড়ে দিই
আমরা ভান করি নিভে যাওয়া আগুন
আমাদের এই নরম হাতে নেভা আগুন
তাদেরকে মাপ মতো জ্বালিয়ে দিই তাদের 
টিপ্পনীকে, ঐ আগুনে পুড়িয়ে দিই...
ওয়াইনে চুমুক দিতে দিতে ভাবতে থাকে--

অর্পিতা ওয়াইনের গ্লাসে চুমুক দেয়, 
নিজেদের এই সব ভাবনা বলতে থাকে—
সে ভাবতে থাকে ঐ ছেলেটার কথা—
যে এসেছিল, প্রেমের অভিনয়ে, ওর 
শরীরকে পেতে
অর্পিতা আওয়াজ করে, কেউ যেন
অনুমতি ছাড়া বাড়ির ভিতর ঢুকে পড়েছে—
তার ফিসফিস শব্দে বুঝতে পারে সে		
অর্পিতার প্রেম অভিনয়ের, শরীর আসে না—
পরের দিন অর্পিতা ঘুম থেকে উঠে নিজের
সঙ্গে কোরাস গায় – আমি যা তাই আছি
প্রেম অভিনয়ে সে ছুঁতে পারেনি আমাকে---

White wine শেষ হলে port wine—Bach-এর পর
কিশোরী আমানকর চলতে থাকে মিউজিক সিস্টেমে—

জয়ীর মনে সেই দিন- যে  অর্পিতার কাছে এসেছিল,
ওই ছেলেটি প্রতিশ্রুতি নিয়ে এসেছিল
সে কি ওকে ভালবাসতে পারবে—বিছানায় এসে বসে—
জয়ী তাকিয়ে থাকে, নিজেকে ঐ ছেলেটির কাছে থেকে 
দূরে নিয়ে যেতে পারে—
ওকে বলে গ্রীষ্মের সব প্রতিশ্রুতি রোদের গরমে থাকে
ঘরে এসে পৌঁছোবে না—
টেবিলে হুইস্কি রাখা আছে, তুমি এক পেগ নাও—
আমাকে ধরার চেষ্টা করো না কারণ ওই প্রতিশ্রুতির বাইরে
রাখা আছে—
ছেলেটি চলে যায়, এক পাত্র গলায় ঢেলে—
জয়ী বলে চলে, তখন ব্যালকনিতে, নিজের মনেই 
শোনে, আমি পা ডুবিয়ে ছিলাম জলে— 
সামনে আয়না ছিল, দেখতে পাই একটা ফাঁকা ঘর---
ঘরে কোনো আসবাব নেই, আমি দাঁড়িয়ে আছি আয়নার
দিকে মুখ করে---

আমনকরের গান চলতে থাকে, পোর্ট ওয়াইন শেষ, ওরা হাতে হাত রাখে।
 

পর্ব-৫

হানিসাকাল ও মধুমতী ফুলের রমণীয়তা

তোমার ও আমার 
ভালোলাগা তা
ছড়ানো-ছিটানো বাগান 
পাহাড়ের ভ্যালীতে 
পৃথিবীর মাঝখানে--

তুমি জয়ী বলতে 
পারবে না
ওই বাগান এক 
পরিচ্ছন্ন হাতে
তৈরি করা—

পাহাড়ের ওই উপত্যকার 
বাগানে
না-চাওয়া গাছগুলো 
থাকবেই—

তোমার আমার প্রেম
যাই বলি না কেন
অশরীরী
আমার তোমার প্রেম
সাগর পেরিয়ে শরীরী—

এই ভালোলাগা পূর্ণ
হয় সকালে ঐ বাগানে
হানিসাকাল ও 
মধুমতী ফুলের 
লাবণি আবেশে— 

গন্ধের আরোহণ 
ছড়িয়ে যায়
যারা হেঁটে যায় ওই 
উপত্যকা দিয়ে
তারাও বুঝতে পারে—

রঙবেরঙের পাহাড়ি
পাখিরা 
পাহাড়ি প্রজাপতিরা
কাটিয়ে দেয়
তাদের রাত দিন—
তাদের বেড়ে ওঠার সাথে
আমার তোমার 
ভালোবাসা
এখানে এসে পৌঁছেছে—

তারাও বৃষ্টিতে ভিজে
তারা কাটিয়ে দেয় দিনভর
বৃষ্টিতে ভিজা 
দিনগুলোতে—

তারা রোদে শুকিয়ে নেয় নিজেদের
ওই পাতা থেকে সেই পাতায়
ওই গাছ থেকে 
সেই গাছে—

আমার প্রেম আমার ভয়
জয়ী তোমার ভালবাসা
কোনোভয়ের মাঝখানে
না আসে—

আমাদের দুজনের যত্নে
আমার প্রেম তোমার 
ভালবাসা
চেনা পরিধির বাইরে—

ওই পাহাড়ি বাগানে
রঙবেরঙের প্রজাপতি
নানা রঙের 
পাখি হয়ে—

আমার ও তোমার রোজকারের
জীবন পরিধিতে
হানিসাকাল ও মধুমতী ফুলের
রমণীয়তা ম ম করে  
কোনো কেন্দ্র বিন্দু ছাড়া।

পর্ব-(৫)  শেষ …ধারাবাহিক চলবে

29/6/2025

Copyright@ Amitava Mukherjee